শেখ বাদশা:-
আশাশুনি উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর হতে জারিকৃত নির্দেশনা বা পরিপত্র না মানার অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উদাসীনতায় বিপাকে শিক্ষক সহ সংশ্লিষ্টরা।
জানাগেছে, খুলনা বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অফিস টেলিফোনে গত ইং ১৯/৭/২৩ আশাশুনি উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শুন্য পদের তালিকা প্রস্তুত ও পাঠানোর নির্দেশনা প্রদান করেন। সে মোতাবেক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার আবদুর রকিব ২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালিকা প্রণয়ন করেন। যার মধ্যে মধ্যম বেউলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও লিপিবদ্ধ থাকে। এদিকে শূন্য পথ দেখানো স্কুলে গত ইং ২৪/০২/২৩ ইং তারিখে উক্ত মধ্যম বেউলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার মন্ডলের বদলী হয়। কিন্তু উক্ত শিক্ষক সুনীল কুমার মন্ডল দীর্ঘ ১১মাস পর উক্ত বিদ্যালয়ে যোগদান না করায়, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পথটি শূন্যই রয়ে যায়। প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার মন্ডল এক প্রতিবেদককে জানান বদলি আদেশ রদ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর তিনি একটি আবেদন করেছিলেন, কিন্তু কি কারণে বদলি রদ হয়নি তা তিনি জানেন না। তবে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থেকে সব শেষে গত ০৮/০১/২৪ তারিখে ১১২ নং মধ্যম বেউলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি যোগদান করেন এবং এর আগে ২১নং বেউলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১মাস ধরে কর্মরত ছিলেন বলে জানান তিনি।
তবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানাগেছে তিনি ০৮ তারিখের পরিবর্তে ০৯ তারিখে যোগদান করেন।
আশাশুনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের পাঠানো ০১ নভেম্বর-২৩ আরও একটি প্রধান শিক্ষক শুন্য পদের প্রস্তাব পত্রের উপর ভিত্তি করে গত ইং ২৬ ডিসেম্বর বিভাগীয় শিক্ষা অধিদপ্তরের এক পত্রে (স্মারক নং ১৫৯৭) প্রশাসনিক বদলির নিমিত্ত প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ সংরক্ষণ প্রসঙ্গে, বিভাগীয় উপ পরিচালক মোসলেম উদ্দিন প্রধান শিক্ষক মুর্শিদা খাতুনকে উক্ত ১১২ নং মধ্যম বেউলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ প্রদান করেন। একই স্কুলে দুইজন প্রধান শিক্ষক নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন উভয় প্রধান শিক্ষকগণ।
জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে বদলি আদেশ না থাকলেও আইন কানুনকে তোয়াক্কা না করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বদলি আদেশ প্রদান করেন আশাশুনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বৃন্দ। শিক্ষক ও স্কুল সমূহ তদারকির জন্য দু’জন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রকিব এবং আবু সেলিম দায়িত্বে থাকলেও সরকারি নির্দেশনাকে তোয়াক্কা না করে স্বেচ্ছাচারিতা ও নিজেদের মনগড়া আইন তৈরি করে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে স্বায়ত্বশাসিত প্রাথমিক শিক্ষা অফিস হিসেবে দাড় করিয়েছেন তারা। অভিযোগ উঠেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনকালীন সকল কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ব্যতীত কোন কর্মচারীর বদলির সুযোগ না থাকলেও আশাশুনিতে এর ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। যার প্রতিফলন নির্বাচনের পরের দিনই মধ্যম বেউলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার মন্ডলের পূর্বের লিখিত ও বর্তমানে মৌখিক বদলীর করেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তাবৃন্দ। এ যেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের জারিকৃত নির্দেশনা শিক্ষা কর্মকর্তারা বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার আবু সেলিম জানান, সুনীল কুমার মন্ডলকে অনেক আগেই বদলি করা হয়েছিল। তিনি বদলি আদেশ স্থগিত করার জন্য একটি আবেদনও করেছিলেন, কিন্তু সেটি গ্রহণ না হওয়ায়, নির্বাচনের পরের দিনই তাকে বদলিকৃত স্কুলে যোগদান করতে হয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানে দুই জন প্রধান শিক্ষককে বদলির বিষয়ে তিনি বলেন বিভাগীয় শিক্ষা কর্মকর্তার প্রস্তাবনা আদেশ মঞ্জুর হলে সুনীল কুমার মন্ডল আগের বিদ্যালয়েই ফিরে যাবেন।
সরকারি নির্দেশনা অমান্য সহ যোগদানের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার বর্মন জানান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মৌখিক অনুমতি ক্রমেই সুনীল কুমার মন্ডলকে উক্ত বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। এখানে কোনভাবেই আইন ভঙ্গ করা হয়নি।
0 Comments